বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য ‘পিআর’ পদ্ধতি’র বিকল্প নেই : কক্সবাজারে গোলটেবিল বৈঠক

চকরিয়া টাইমস :

জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনসহ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত পাঁচ দফা দাবিতে ১১ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল সড়কস্থ দলীয় কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম মীর, খেলাফত মজলিস কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আবু মুছা, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক নিজামী, খেলাফত মজলিস জেলা সেক্রেটারি মাওলানা জুনায়েদ মাহমুদ, নেজাম ইসলাম কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নূরুল হক আরমান, জাতীয় নাগরিক পার্টি জেলা সংগঠক অধ্যাপক ওমর ফারুক, জেলা যুব ইসলামী আন্দোলন সভাপতি নূরুল ইসলাম আজিজী, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জাফর উল্লাহ ইসলামাবাদী, অধ্যক্ষ মাওলানা শফিউল হক জিহাদী, কক্সবাজার ৩ সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী শহিদুল আলম বাহাদুর, শ্রমিক নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মুহসীন, শহর জামায়াতের সেক্রেটারি রিয়াজ মোহাম্মদ শাকিল।
জেলা সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক জসিম উদ্দীন, অধ্যাপক নূরুল আজিম, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি কামাল হোসেন আজাদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোহাম্মদ হাশিম, দৈনিক নয়া দিগন্ত কক্সবাজার অফিস প্রধান জিএএম আশিক উল্লাহ, আমার দেশ প্রতিনিধি আনছার হোসেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলা সহ-সভাপতি ছৈয়দুল হক সিকদার।
উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি আল আমীন মু. সিরাজুল ইসলাম, জেলা অফিস সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, কক্সবাজার সদর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক খুরশিদ আলম আনসারী,
ইসলামী আন্দোলন কক্সবাজার জেলা প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ জুনাইদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবু নাসের, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ ইসমাইল, মাওলানা শামসুল হক আজিজী, মাওলানা শাহজাহান আব্দুল্লাহ, মাওলানা মোস্তাফিজুল হক চৌধুরী, হাফিজ মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফারুক, দৈনিক হিমছড়ি সম্পাদক হাসানুর রশীদ, সাংবাদিক হুমায়ূন সিকদার, শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দরবেশ আলী মুহাম্মদ আরমান, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাম্মদ আবদুর রশীদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দেশের মানুষ সাড়ে পনেরো বছরে পর পর তিনটি নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে পারেনি। প্রচলিত পদ্ধতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আ'লীগ জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে দিনের ভোট রাতে এবং আমি ডামি মার্কা নির্বাচন করেছে। যার কারণে সুশাসনের পরিবর্তে দেশবাসী সাড়ে পনেরো বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে পড়েছিল। ২০২৪ সালের জুলাই গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ।
দুই হাজার শহীদের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ আবারো পুরানো কাঠামোতে ফিরে যাবে এটা দেশবাসী প্রত্যাশা করে না। তাই জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ইসলামী ও সমমনা দলগুলো 'পিআর' পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি এবং সেই আলোকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় দেশে আবারো অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা এবং নতুন ফ্যাসিবাদ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল প্রশাসন, সচিবালয়, পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব বলয় তৈরি করে প্রভাব বিস্তারের আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই অবস্থায় নির্বাচন হলে সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া নির্বাচন হলে দেশে অরাজকতা বৃদ্ধি পাবে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে যার কারণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে যা আমরা কখনোই কামনা করি না। সুতরাং ক্ষমতার মোহ এবং দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির উর্ধ্বে উঠে দেশের সংকট সমাধানে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। বক্তারা আরো বলেন, আমরা পরিলক্ষিত করছি কক্সবাজার জেলাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে আওয়ামী চক্রের চিহ্নিত অপরাধী, সন্ত্রাসী ও ভোট ডাকাতরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিকল্পিত খুন-খারাবি করে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, প্রশাসনের ব্যর্থতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর চেষ্টা চালাবে আমরা চিহ্নিত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত এবং আ'লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আমরা সকল ইসলামী দল দেশব্যাপী একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর।
দেশের মানুষ অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। জন আকাঙ্ক্ষার সরকার যদি জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: