Showing posts with label সারাদেশ. Show all posts
Showing posts with label সারাদেশ. Show all posts
থাইল্যান্ডের হাসপাতালে মারা গেছে চট্টগ্রামের জুলাই যোদ্ধা হাসান

থাইল্যান্ডের হাসপাতালে মারা গেছে চট্টগ্রামের জুলাই যোদ্ধা হাসান

স্টাফ রিপোর্টার : 

ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মোহাম্মদ হাসান থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।

পরিবারের উদ্বৃতি দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তার ভেরিফাইড ফেসবুকে একথা জানিয়েছেন।

উমামা ফাতেমা ফেসবুকে লিখেছেন ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হাসান ভাই একটু আগে শহীদ হয়েছেন। হাসান ভাই আহত হওয়ার পর থেকে 'এম্পাওয়ারিং আউয়ার ফাইটার্স’র মাধ্যমে তার সঙ্গে কলি আপু সার্বক্ষণিক যুক্ত ছিলেন। কিছুদিন আগে কলি কায়েয আপু বলছিলেন হাসানের অবস্থা বেশি ভালো না। আমি ভাবছিলাম দেশে আসলে দেখতে যাব। কি বলব! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আহত, শহীদদের পরিবারের জীবন থমকে গেছে। আমরা ঠিকই যাপন করে যাচ্ছি। কিন্তু যাপন করি কই! জুলাই তো কাঁধে বয়ে বেড়াতে হয়। শহীদদের লাশের ভার কি আমাদের কাঁধকেই ভারী করে তুলে! বাকিসব তো দেখি দিব্যি কেটে যাচ্ছে।’

এ ছাড়া, রাত ১১টা ২১ মিনিটে ‘এম্পাওয়ারিং আওয়ার ফাইটারস’ নামে একটি ফেসবুক পেজে হাসানের বোনের বরাতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম আহত যোদ্ধা আমাদের ভাই হাসান থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটু আগে শহীদ হয়েছেন। সবাই দোয়া করবেন। ফোনে খবরটি নিশ্চিত করেছেন হাসানের ছোট বোন সুমাইয়া।

ওই স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়, ‘গত সাত মাস ধরে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে ছিলেন মোহাম্মদ হাসান। গত ১০ এপ্রিল হাসানকে লাইফসাপোর্ট থেকে সরিয়ে সাধারণ বেডে আনা হয়। ২৫ এপ্রিল তার অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে পুনরায় লাইফসাপোর্টে নেওয়া হয়।’

স্ট্যাটাসে বলা হয় ‘গত ৫ আগস্ট টাইগারপাসে আন্দোলনের সময় মাথার ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়- যা সম্ভাব্য ব্রেন ড্যামেজের কারণ হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার খাদ্যনালী ও কণ্ঠনালী এক করে লাইফসাপোর্ট দেওয়া হয়। এ সময় ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে তার মস্তিষ্কে এবং শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে দ্রুত তাকে ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।’

আজ শুক্রবার পৃথক স্ট্যাটাসে এম্পাওয়ারিং আউয়ার ফাইটার্স জানিয়েছে, শহীদ মোহাম্মদ হাসানের মরদেহ আগামীকাল আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশে পৌঁছাবে। ঢাকা সিএমএইচ-এ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। এরপর শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে নোয়াখালীর জামেয়া ইসলামিয়া ফারুকিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে— যেখানে তিনি প্রাথমিকভাবে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর নিজ জেলা নোয়াখালীর সোনাপুর গ্রামে তাঁকে দাফন করা হবে।

হাসান চট্টগ্রামের হালিশহর গরিবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। করোনাকালীন সময় পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়লেও পরিবারকে সহায়তা করতে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তিনি দুই বোনের একমাত্র ভাই হিসেবে পরিবারের ভরসাস্থল ছিলেন। মায়ের দুঃখ ঘোচাতে নিজ হাতে জীবনের হাল ধরতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশের বৃহত্তর স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা ধরে রাখতে আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে এক হতে হবে : হাসনাত

গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা ধরে রাখতে আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে এক হতে হবে : হাসনাত

চকরিয়া টাইমস : 

গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা যাতে কোনভাবেই হুমকির মুখে না পড়ে এবং সম্ভাবনাকে ধরে রাখতে আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে এক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী অন্যতম মুখপাত্র হাসনাত আবদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (২২ মে) তিনি নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে এক পোস্টের মাধ্যমে এ আহবান জানান তিনি। নিম্নে হুবুহু তা তুলে হয়েছে। 

এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে সচেতনভাবেই এক ধরনের কলঙ্ক দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, ছাত্র উপদেষ্টারা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চায়—এমন গুজব ছড়িয়ে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করার নানা কার্যক্রমও চলমান। এই চক্রান্ত কয়েকটি দিক থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

অথচ, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। গতকাল, ২১ মে, এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন— "প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে সময় দিয়েছেন, আমরা সেটিকে সমর্থন করেছি। এর মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তবে আমরা এর মধ্যে বিচার ও সংস্কারের কথা বলেছি।"
অন্যদিকে, ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ১০ মে বলেন— "ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।" তিনি একাধিকবার নির্বাচন বিষয়ে এই অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
তারপরও, দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা এবং ইন্টারিম সরকারের অংশ হওয়া দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়া মোটেই স্বাভাবিক কোন বিষয় বলে মনে করি না।
অন্যদিকে, আমাদের সাব-কনশাস মাইন্ডে আর্মিকে রাজনৈতিক সালিশের ক্ষমতা দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অথচ বিএনপি ঐতিহাসিকভাবে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ভুক্তভোগী একটা দল। আমরা এখনো ওয়ান-ইলেভেনের ইতিহাস ভুলে যাইনি, এখনো তারেক রহমানের নির্যাতনের ঘটনা আমাদের স্মরণে রয়েছে।
সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সতর্ক পাহারাদার। দেশের প্রয়োজনে, সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনে, আমরা প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সুষ্ঠু ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা থেকে ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে আমরা মেনে নেব না। রাজনৈতিক সালিশের সুযোগ দিয়ে আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথ কেউ প্রশস্ত করছে কি না—তা নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে আমরা যাদের পাশে পেয়েছি, তাদের প্রতি আমাদের ঐতিহাসিক কৃতজ্ঞতা থাকবে। আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতেও সব পক্ষকে এক থাকতে হবে। এই দাবিতে বড় কোনো দলের নির্লিপ্ততা আমাদের হতাশ করে।
গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা, আওয়ামী লীগের বিচার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনে যাওয়ার লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। ক্ষণস্থায়ী ফায়দা লুটতে গিয়ে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত বিপুল সম্ভাবনার জনআকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করা হলে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক ব্যর্থতা।
আমরা যেন নিজেরাই বিভাজনের পথ বেছে নিয়ে অন্য কাউকে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ না দিই। বাইরের কাউকে রাজনৈতিক মাতব্বরি করার সুযোগ দিয়ে দেশের শুদ্ধ গণতান্ত্রিক সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে না ফেলি। বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে।



বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন ইউএনও ফেরদৌস আরা

বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন ইউএনও ফেরদৌস আরা

সোহাইল আহমেদ বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): 

"নিজস্ব ভবনের স্বপ্ন পূরণে সাংবাদিকদের নতুন ঠিকানা"

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। নিজস্ব ভবনের অভাববোধ পেরিয়ে এবার তারা পেতে চলেছেন নিজেদের ঠিকানা। বুধবার (১৪ মে) বিকাল ৫টায় বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস আরা।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদা আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ। 

প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৭ বছর আগে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রেসক্লাবের জন্য উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ৬ শতক জমি কিনে দিলেও কোনো নির্বাচিত কমিটি না থাকায় ও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে জমিটি পরিত্যক্ত ছিল। অবশেষে ৩৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে ৫ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

এসময় উপস্থিত ছি‌লেন বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা মো. নাসির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম শিবলী, সহ-সভাপতি ফয়সল আহমেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে রাব্বি রিফাত, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সোহাইল আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক শাহীন আহমেদ সাজু, দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ পলাশ মিয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন সাদীসহ অন্যান্য সদস্যরা। 

ইউএনও ফেরদৌস আরা বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাদের জন্য একটি সুন্দর, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। প্রেসক্লাব ভবনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশা করি।”

ওসি মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, “সাংবাদিকদের কল্যাণে নেওয়া এই মহতী উদ্যোগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবসময় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

প্রেসক্লাব সভাপতি মোল্লা মো. নাসির আহমেদ বলেন, “দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নিজস্ব ভবনের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা গর্বিত ও আনন্দিত।”

সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম শিবলী বলেন, “এই ভবন শুধু ইট-পাথরের কাঠামো নয়, এটি আমাদের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।”

সহ-সভাপতি ফয়সল আহমেদ খান বলেন, “সবার ঐক্য ও সহমর্মিতায় আজকের এই সফলতা এসেছে। সামনে আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।”

দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারীদের দমনে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : মুহাম্মদ শাহজাহান

দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারীদের দমনে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : মুহাম্মদ শাহজাহান

চকরিয়া টাইমস : 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সম্ভাবনার এই লগ্নে বিভিন্ন অপকর্মমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তারা দুষ্কৃতকারী। অসাধু উদ্দেশ্যে দেশকে নৈরাজ্যকর ও অস্থিতিশীল করার জন্য লিপ্ত রয়েছে গণতন্ত্র ধ্বংসকারীরা। দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী এই অপশক্তি দমনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বুধবার (৭ মে) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম অঞ্চল দায়িত্বশীলদের এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
মুহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন, সরকারকে কোনো ধরনের সময় বা সুযোগ না দিয়েই রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। অবৈধভাবে অর্থ ছড়িয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে উত্তেজিত করে রাজপথে নামানো হচ্ছে। এখন সময় এসেছে এই ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেওয়ার। সরকারকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এবং দৃঢ়তার সাথে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে, যেকোনো ধরনের বৈষম্য এবং ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে, যাতে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। আমরা আজকের বৈঠক থেকে আমাদের প্রিয় নেতা এটিএম আজহার ভাইয়ের মুক্তির দাবি করছি।
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের দেওয়ানবাজারস্থ বাংলাদেশ ইসলামিক একাডেমি (বিআইএ) কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অঞ্চল দায়িত্বশীল সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহছানুল্লা ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আমিরুজ্জামান, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির আলাউদ্দিন শিকদার, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা আমির অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল মোমেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা আমির মাওলানা আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও নগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা নায়েবে আমীর মুফতি মাওলানা হাবিবুল্লাহ,রাঙামাটি জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, নগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেক্রেটারি আবদুল জব্বার, কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা সেক্রেটারি মনছুরুল আলম, খাগড়াছড়ি জেলা সেক্রেটারি মিনহাজুর রহমান, বান্দরবান জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।
চারদিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি জাফর আলম

চারদিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি জাফর আলম

চকরিয়া টাইমস : 

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জাফর আলমের (৬৯) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ সোমবার মামলার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।

এদিন সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

গত ২৮ এপ্রিল জাফর আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: সেফাতুল্লাহর আদালত।

এর আগে, ২৭ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। একইদিনে আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশ ডাকে।

এ সময় বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করতে পুলিশের সহায়তায় দলটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।

জাফর আলম ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ২০১৪ সালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী সরকার পতনের পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চকরিয়া ও পেকুয়ায় হত্যা মামলাসহ তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬টি মামলা করা হয়েছে।

সূত্র : ইউএনবি

সাবেক এমপি জাফর কারাগারে

সাবেক এমপি জাফর কারাগারে

চকরিয়া টাইমস:

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে (৬৯) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার নিম্ন আদালত।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের উপপরিদর্শক ফেরদৌস আলম আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাফর আলমের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চকরিয়া ও পেকুয়ায় অন্তত ১৫-১৬টি মামলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের বির্জাখাল খনন শুরু করেছে জামায়াত

চট্টগ্রামের বির্জাখাল খনন শুরু করেছে জামায়াত

'জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জামায়াতকে স্বাগত জানাচ্ছি' -ডা. শাহাদাত হোসেন

'হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ভুলে আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে চাই' - শাহজাহান চৌধুরী
চকরিয়া টাইমস: ‘সবার সহযোগিতায় বির্জাখাল পাবে প্রাণ’ এই স্লোগানকে ধারণ করে চট্টগ্রাম নগরবাসীর দুঃখ খ্যাত জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে বির্জাখাল খনন কার্যক্রম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়াস্থ ইছহাকের পুল এলাকার অছি মিয়া দোস্ত ভবনের মাঠে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শপথ নেয়ার পর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি মনে করেছি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। চট্টগ্রাম নগরী কারো একার শহর নয়। সকলের দেশ ও শহরের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, তাহলেই দেশ ও শহর সমৃদ্ধ হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এই উদ্যোগের জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে স্বাগত জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে চট্টগ্রাম নগরকে জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। আইন আইনের জায়গায় থাকবে। এখন থেকে আমরা কঠোর হবো। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে হলে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব ধরনের উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনকে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করব। হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ভুলে আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের কয়েকটা বাজারের দায়িত্ব দিন। সেই বাজারগুলোকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা চায়নার শহরের মত সুন্দর বাজার উপহার দিবে। পাশাপাশি ১০টি স্কুলের কাজ করার সুযোগ দিন। সেগুলোর আঙ্গিনাসহ আশেপাশের এলাকা জামায়াতের কর্মীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দেবে, ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার আই ইউ এ চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুল হক, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম-৯ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, বাকলিয়া থানার আমির সুলতান আহমদ, নায়েবে আমির আবুল মনসুর, সেক্রেটারি নুর আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কাজী হাসান বিন শামস্, ইঞ্জিনিয়ার ফাহমি, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসাইন, আমির হোসাইন, আবু বকর ছিদ্দিক, বিশিষ্ট ব্যাংকার এয়াকুব আলী, কোতোয়ালী থানা নায়েবে আমীর অধ্যাপক আবদুজ্জাহের, চকবাজার থানার নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, কোতোয়ালী থানার সেক্রেটারি মোস্তাক আহমদ, চকবাজার থানার এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি শহিদুল্লাহ, কোতোয়ালী থানার এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আ ন ম জোবায়ের প্রমুখ।
গণসমাবেশ শেষে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ও নগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরীসহ খাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী এবং বাকলিয়া এলাকার সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগের কারণে জনগণের মধ্যে উৎসাহ উদ্দিপনা দেখা দেয়। তারা জামায়াতে ইসলামীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং জামায়াতে ইসলামীর সাথে থাকার ইচ্ছাপোষণ করেন। বির্জাখাল এলাকায় উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।
ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের জন্য পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা দায়ী : মামুন মাহফুজ

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের জন্য পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা দায়ী : মামুন মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক : 

আছিয়াকে নিয়ে কোন কথা লিখিনি বলিনি।

কেন সে কারণটা বলতেও আমার বুক কাঁপে।
এটা একটা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স। এর জন্য সরকার নয় পরিবার দায়ী। তবে সবচেয়ে বেশি দায়ী সমাজ ব্যবস্থা।
এই সমাজ ব্যবস্থা কাউকে ধনী বানিয়েছে কাউকে দরিদ্র বানিয়েছে কাউকে ক্ষমতাবান বানিয়েছে আর কাউকে অসহায় বানিয়েছে।
ধর্ষণের প্রধান কারণ এই বৈষম্য। যার শক্তি আছে সে তার চেয়ে কম শক্তিশালী বা দুর্বলের ওপর যেকোনো ধরনের উপায়ে নিপীড়ন করে।
ধর্ষণ যেকোনো পুরুষ করতে পারে। ধর্ষণ করার ক্ষেত্রে একটা পুরুষ চিন্তা করে না যাকে ধর্ষণ করবে সে শিশু নাকি যুবতী নারী! বরং সে চিন্তা করে এর সঙ্গে কিছু করলে আমার কিছু হবে কিনা যখন সে বুঝতে পারে যে এর সঙ্গে খারাপ কিছু করলেও আমার কিছু হবে না তখনই সে খারাপ কিছু করে।
কখন ধর্ষক এটা ভাবে?
যখন প্রতিপক্ষ দুর্বল হয় বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর উপর মানুষ অত্যাচার নিপীড়ন ধর্ষণ ইত্যাদি বেশি চালায়।
এসব তাত্ত্বিক কথা বলে আর লাভ নেই, মানুষ কোন সমস্যার মূল উপড়ে ফেলতে রাজি নয়, তাৎক্ষণিক সমাধান চায়।
আছিয়ার উপর এমন নিষ্ঠুর ঘটনা যে ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা ওই পশুটার কাছ থেকে আগেই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু আছিয়ার বোন এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি তার দারিদ্র্যের কারণে। সামাজিক কারণে। আছিয়ার বাবা মার কারণে।
আছিয়ার বোন যখন তার শশুরের কাছ থেকে কুদৃষ্টির আভাস পেলেন তখনই তার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না কারণ আছিয়া সম্পূর্ণ স্বামী নির্ভর এবং তার বাবা মা অত্যন্ত দরিদ্র। এইচ অসহায়ত্ব এরকম অসহায়ত্ব নারীদেরকে ধর্ষিত হতে বাধ্য করে নিপীড়িত হতে বাধ্য করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে।
শশুরের কু মতলব টের পেয়ে আছিয়া স্বামী-সংসার ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা আছিয়ার বাবা-মায়ের জন্য অভিশাপ আর সমাজের জন্য কলঙ্ক। কোন মেয়ে বাপের বাড়ি ফিরে গেলে সেইটা মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধ বড় লজ্জার। কার কতটুকু দোষ তার বিচার ছাড়াই মানুষ রায় দিয়ে দেয়।
ঘটনার দিন আসিয়া ও তার স্বামী কোথায় ঘুমিয়ে ছিল আর তার ছোট বোনটি কোথায় ঘুমিয়ে ছিল সেটি আমি আজ পর্যন্ত পরিষ্কার হতে পারিনি।
নিঃসন্দেহে বোন তাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝখানে আছিয়াকে জায়গা দেননি। এমনকি আছিয়া কে আলাদা থাকতে দিলেও সেখানে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা কিংবা চিন্তা করা বোনের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
আছিয়ার বোন আছিয়ার সর্বনাশ ঠেকাতে পারেনি। কিন্তু শ্বশুরের মতলব থেকে কুদৃষ্টি থেকে সে নিজেকে রক্ষা করেছে। সেজন্য আছি আর বোনকে স্যালুট অন্তত একজন নারী নিজেকে হেফাজত করতে পেরেছে।
কিন্তু একই স্থানে যদি আছিয়ার বোন না হয়ে আছিয়ার ভাই হত দৃশ্যপট টা কী হতো?
ভাই তার নিজের জীবন বিপন্ন করে হলেও বোনকে রক্ষা করত বোনের গায়ে একটা আঁচর লাগতে দিত না। একটা মেয়ে তার স্বামী তার বাবার চেয়েও তার ভাইকে বেশি ভালোবাসে ঠিক এই কারণে। একটা মেয়ে তার স্বামীর কাছে তার বাবার কাছেও যতটা নিরাপদ নয় তার চেয়েও বেশি নিরাপদ বোধ করে তার ভাইয়ের কাছে।
আজ থেকে কান খুলে শুনে রাখেন বোনকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর সময় আরেকটা বোনকে দিয়ে পাঠাবেন না, ভাইকে পাঠাবেন। ভাই যদি ছোট হয় সে তার বোনকে আগলে রাখার সমস্ত চেষ্টা করে এবং সেই ক্যাপাসিটি আল্লাহ তাকে দিয়ে দেন।
আর এ কারণেই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে পুরুষ হচ্ছে নারীর দায়িত্বশীল, রক্ষা কর্তা, অভিভাবক। আর এ কারণেই নারীদের দূরযাত্রায় হজ যাত্রায় একজন পুরুষ মাহরেম লাগে।
আমি আমার মেয়েকে স্কুলে পাঠাবার সময় কিংবা বাসায় একলা কখনো রেখে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় তার সাথে তার ছোট ভাইকে রাখি। সে যদিও ছোট কিন্তু আমরা তার দায়িত্বশীলতা এই ছোটবেলাতেও যতটুকু দেখেছি তা সত্যি মুগ্ধ করার মত। আলহামদুলিল্লাহ। ভাই তার বোনের সঙ্গে এটা নিয়ে ওটা নিয়ে ২৪ ঘন্টা লড়াই করে কিন্তু বোনের হেফাজতের ক্ষেত্রে সে এক বিন্দু অবহেলা করে না, ছাড় দেয় না।
আমি নিশ্চিত আছিয়ার ক্ষেত্রে সেখানে যদি আছিয়ার বোন না হয়ে ভাই হত ঘটনা ঘটতো পুরোটাই উল্টো।

লেখক:
মামুন মাহফুজ
সাংবাদিক
দুই উপজেলার মেলবন্ধন এক বাঁশের সাঁকো

দুই উপজেলার মেলবন্ধন এক বাঁশের সাঁকো

সোহাইল আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া): 

তিতাস নদীর উপর অস্থায়ী সাঁকো, পাকা সেতুর দাবি ৩৫ হাজার মানুষের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তিতাস নদীর উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁশের সাঁকোই এখন ভরসা দুই উপজেলার ১৭ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের। অর্ধশত বছর ধরে এই স্থানে খেয়া নৌকায় পারাপার করতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হতো এলাকাবাসীর। তবে গত ৪-৫ বছর ধরে এই বাঁশের সাঁকো নির্মিত হওয়ায় মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। এখন ঝুঁকি নিয়ে হলেও দ্রুত নদী পারাপার করতে পারছে তারা।

সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তিতাস নদীর উপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মিত হলে বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগর উপজেলার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে। বিশেষ করে নবীনগর উপজেলার অন্তত ১৭ হাজার মানুষ কম সময়ে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে পারবে।

স্থানীয়দের দাবি উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের চরলোহনিয়া ওয়াই সেতুর নিচ থেকে তিতাস নদীর একটি শাখা কলাকান্দি, পূর্বহাটি, ফরদাবাদ, পিঁপড়িয়াকান্দা, দুবাচাইল, বাজে বিশারা, ভিটিবিশারা, গোকুলনগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে ইমামনগর পর্যন্ত প্রবাহিত। অর্ধশত বছর ধরে এই স্থানে খেয়া নৌকা চলাচল করত। কিন্তু নৌকায় পার হতে সময় লাগার পাশাপাশি ঝুঁকিও ছিলো অনেক।

অবশেষে এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। এই সাঁকো ব্যবহার করে দুই উপজেলার মানুষ প্রতিদিন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরসহ ঢাকা, কুমিল্লা, মুরাদনগর ও নবীনগরে যাতায়াত করছে। তবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি এই সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং বর্ষাকালে চলাচল আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। 

সাঁকোটি ব্যবহার করে নবীনগর উপজেলার রতনপুর, শ্রীকাইল, ভিটিবিশারা, বাজে বিশারা, শাগদা, পেন্নাই, চন্দ্রনাইল, দুবাচাইল, সাহাপুর, সাতমোড়া, মোল্লা ও ভাউচাইল গ্রামের মানুষ কড়িকান্দি ফেরি পার হয়ে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছে। অন্যদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ইমামনগর, দরিকান্দি, গোকুলনগর, খাল্লা ও ফরদাবাদ গ্রামের মানুষ নবীনগরসহ কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে যাতায়াত করছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি দ্রুত সেতু নির্মাণ স্থানীয়দের মতে, তিতাস নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মিত হলে দুই উপজেলার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। এতে নবীনগরের অন্তত ১৭ হাজার মানুষ কম সময়ে ঢাকা যেতে পারবে। এলাকাবাসী দ্রুত একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেছেন, বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তাদের দাবি, প্রশাসনের নজরদারি ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর হবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে।

নতুন কমিটি ঘোষণা, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজের প্রতিশ্রুতি: মাহবুবুর রহমান

নতুন কমিটি ঘোষণা, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজের প্রতিশ্রুতি: মাহবুবুর রহমান

সোহাইল আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার: 

ছাত্র-তরুণরা ধ্বংসের মুখে থাকা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার সুযোগ দিয়েছে উল্লেখ‌ করে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অধ‌্যাপক মাহবুবুর রহমান

বৃহস্পতিবার  (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকা‌লে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উদ্যোগে  মাওলাগঞ্জ বাজার অ‌ডি‌টোরিয়ামে এক জনসভায়  তিনি এ কথা বলেন। মাও‌লানা জুবা‌য়ের আহ‌মে‌দ ও মাওলানা নুরুদ্দি‌নের সঞ্চলনায় সভাপতিত্বে ক‌রেন মোহম্মদ শামসুল হক (সুমন)

মাহবুবুর রহমান ব‌লেন, ‘ছাত্র তরুণরা ধ্বংসের মুখে থাকা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। মতপার্থক্য নিয়েই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে সবাইকে।’

তিনি আরও ব‌লেন আমাদের লক্ষ্য একটাই, বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। যেখানে জুলুম, দুর্নীতি, অন্যায় থাকবে না। থাকবে শান্তি, সমৃদ্ধি, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সাম্য। সেই রাষ্ট্র হবে ইসলামি মূল্যবোধের রাষ্ট্র। এ জন্য আমরা ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়াস নিয়েছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজ করতে চাই। ইসলামের পক্ষে বৃহত্তর ঐক্যের জন্য এই প্রয়াস ইনশা আল্লাহ সফল হবে

সভায় প্রধান বক্তা হি‌সা‌বে উপ‌স্থিত ছি‌লেন অধ‌্যাপক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা গাজী নিয়াজুল ক‌রীম, মুফ‌তি মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা জা‌কির হোসাইন,হা‌ফেজ কারী মোহাম্মদ আলী, মুফ‌তি সাইদুর ইসলাম আল মাদানী, মাওলানা জ‌মির হোসাইন সি‌দ্দিকী, আলমগীর হোসাইন (বাদল), মুফ‌তি মাসুম বিল্লাহ ফরিদী আরও উপ‌স্থিত‌ ছি‌লেন হা‌ফেজ আশ্রাফ আলী, মুফ‌তি শেখ সাদী বিন আব্দুল মজীদ, মুফ‌তি মোবারক উল্লাহ সিরাজী, শ‌ফিক মিয়া প্রমূখ। 

প‌রে স‌ম্মেলন শে‌ষে দুই (২০২৫-২৬) বছ‌র মেয়াদী নতুন ক‌মি‌টি গঠন করা হয় সভাপ‌তি মো: শামসুল হক সুমন, সহসভাপ‌তি মো: জুবা‌য়ের আহ‌মেদ, সহসভাপ‌তি মুফ‌তি সাইদুল ইসলাম, সে‌ক্রেটা‌রি মওলানা জা‌কির হোসাইন, সাংগঠ‌নিক সম্পাদক মাওলানা নুরু‌দ্দিন।

বিচারের পরেই অন্য কাজ : কক্সবাজারে ডা. শফিকুর রহমান

বিচারের পরেই অন্য কাজ : কক্সবাজারে ডা. শফিকুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা আমাদের এ দেশে মেজরিটি মাইনরিটি একেবারেই মানিনা। বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে তারা এদেশের মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারো উপর জোর খাটানোর কোন অধিকার রাখেনা। অন্য ধর্মও কোনো ধর্মের উপর জোর খাটাতে পারবেনা যদি সেটি ধর্ম হয়ে থাকে। তিনি "আগে বিচার তারপর অন্য কাজ, ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ" সবার বলে মন্তব্য করেন।
শনিবার (৮ ফ্রেব্রুয়ারি) কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান আরো বলেন, সমাজের মধ্যে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু বলে যুদ্ধ লাগিয়ে রাখা হয়েছিলো। এখানে মেজরিটি মাইনরিটি বলে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধরমের ভাই বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের সম্পদ গ্রাস করা হয়েছে, জায়গা জমি দখল করা হয়েছে, ইজ্জতের উপর হাত দেয়া হয়েছিলো, ক্ষেত্র বিশেষে তাদের ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর দোষ দেয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর উপর।
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্ট করে নাম ঠিকানা দিয়ে আমাদের সাহায্য করুন। আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি, ন্যায় বিচার আমরা আপনাদের হাতে তুলে দেবো। আমরা নিশ্চিত এই অপকর্মের সাথে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।
২৪ এর অভ্যুত্থানকারী প্রজন্মকে সম্মান জানিয়ে আমির বলেন, তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আমরা আমাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। এটাই সত্য কথা। কিন্তু সাড়ে ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটা ফ্যাসিজমের উপর দিয়েছিলো এবং জাতি সফল হয়েছিলো।
আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অনেকে আবার নিজেরা কৃতিত্ব দাবী করে৷ আমি মাস্টারমাইন্ড, অমুক ভাই মাস্টারমাইন্ড তমুক নেতা মাস্টারমাইন্ড। মহা পরিকল্পনাকারী মহান রাব্বুল আলামিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে কোনো মাস্টারমাইন্ড আমরা বিশ্বাস করিনা।
ডা. শফিক আরো বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরাও সেভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো, সেটা ছিলো আমাদের আশা। কিন্তু বাস্তবে সে আশা পূরণ হয়নি। যদি বলি একেবারেই পূরণ হয়নি, তাহলে কথাটা সত্য হবেনা। কিন্তু পূরণ হবার বিশাল প্রত্যাশা মানুষের ছিলো। একটা স্বাধীন বিচার ব্যাবস্থা আমরা এখনো পেলাম না।
নিজ দলের প্রতি অবিচারের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, আইনের অঙ্গনে এসে যারা বেআইনী কর্মকাণ্ড করেছেন, প্রধান বিচারপতির দরজায় এসে লাথি দিয়েছিলো, আওয়ামীলীগ তাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিলেন। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবেনা এটাই স্বাভাবিক। তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করিনা, তবে আমরা অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট। সবগুলো খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ২৪ এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ। এ বিচার না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে। তিনি ছাত্র জনতাকে স্যালুট জানান। দীর্ঘদিন ধরে আটক জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন।
এছাড়া সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনেজির আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ”পুলিশ ভাইদের বলছি বেনেজিরের ফাঁদে পা দিবেন না।” তিনি কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরেন।
তিনি আরাে বলেন, গত আওয়ামী আমলে সারাদেশে জামায়াতের সমস্ত অফিস বন্ধ, নিবন্ধন বাতিল, প্রতীক বাতিল করে সর্বশেষ দলকে নিষিদ্ধ করেছিল আল্লাহর অসীম রহমতে ৫ আগষ্ট তারাই নিষিদ্ধ হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এটাই আল্লাহর বিচার।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর বিশাল কর্মী সম্মেলনে একত্রিত হয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। সম্মেলনের আগেরদিন রাত থেকে কুতুবদিয়া ও টেকনাফ থেকে প্রচুর নেতাকর্মী ঢুকে পড়ে সম্মেলন স্থলে। এ জনস্রোত লাখ ছাড়িয়ে যায়। কর্মী সম্মেলন ঘিরে রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণে সেজেছিল পুরো শহর। এ কর্মী সম্মেলনে জেলার ৪ সংসদীয় আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীদের জয়ী করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়।
কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক এনামুল হক মনজু ও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জাহিদুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন-হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি পরিমল কান্তি শীল, বান্দরবান জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবদুস সালাম, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মুফতি হাবিবুল্লাহ, এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, শামসুল আলম বাহাদুর, মাওলানা শফিউল হক জিহাদী, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, আল আমিন মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমীর আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাবেক ককসু ভিপি শহিদুল আলম বাহাদুর, ছাত্রনেতা আব্দুর রহিম নুরী, কক্সবাজার শহর জামায়াতের সেক্রেটারি রিয়াজ মুহাম্মদ শাকিল প্রমুখ।
শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই : শাহজাহান চৌধুরী

শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই : শাহজাহান চৌধুরী

বাইশারী জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জুলাই বিপ্লবে নির্বিচারে গুলী করে শতশত ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। শহীদ করেছে নিষ্পাপ শিশুদেরও। তাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আজ আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। এ দেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের রক্তের মূল্য ইনশাআল্লাহ আমরা পরিশোধ করবো।
তিনি শহীদের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, জামায়াত ইসলামী একটি চরিত্রের পরিবর্তনের ধারা তৈরি করেছে। ৫৩ বছরে জামায়াত ইসলামের এ ধারায় এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে মেম্বার পর্যন্ত তৈরি করেছে একদল নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক সেবক। জামায়াত কর্মী মানেই সমাজকর্মী। মানুষকে পরিবর্তন করার জন্য সবাই মিলে যদি আমরা সেই ইতিবাচক ধারা দিতে পারি; তাহলে বাংলাদেশকে কেউ পিছিয়ে ফেলতে পারবে না। তাই শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন তথা আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটাতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে বিশাল কর্মী সম্মেলন বাইশারী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর জামায়াতের আমীর আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
বাইশারী ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মো. ছলিম উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মো. আহসান হাবিবের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বান্দরবান জেলা জামায়াতের আমীর এস.এম আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের সুযোগ্য ছেলে আলী আহমদ মাবরুর, বান্দরবান জেলা নায়েবে আমীর পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ ফজলুল হক, জামায়াত নেতা ডা. শাহ আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা মুহাম্মদ রফিক বশরী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ওমর ফারুক, রামু উপজেলা জামায়াতের আমীর ফজলুল্লাহ মুহাম্মদ হাসান, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা মো. তৌহিদুল ইসলাম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু নাসেরসহ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সহযোগি সংগঠনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মী সম্মেলন শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন চট্টগ্রামের পানজেরী শিল্পী গোষ্ঠী।


সমর্থন দিন, স্বপ্নের মানবিক দেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ : মাগুরায় ডা. শফিকুর রহমান

সমর্থন দিন, স্বপ্নের মানবিক দেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ : মাগুরায় ডা. শফিকুর রহমান

অনলাইন ডেস্ক: 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান মাগুরাবাসীর সমর্থন চেয়ে বলেছেন, আমাদের সমর্থন দিন। আমরা আপনাদের সাথে হাতে হাত ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বপ্নের মানবিক দেশ গড়বো। তিনি অঙ্গীকার করে বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মা এবং আহতদের কথা দিচ্ছি, ক্ষমতায় গেলে নিজেরা চাঁদাবাজি করবো না, কাউকে চাঁদাবাজি করতে দিবো না। নিজেরা দখলবাজি করবো না, কাউকে দখলবাজি করতে দেবো না। আপনাদের সাথে নিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ।
১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন মাগুরা জেলা আমীর এম বি বাকের।
ডা, শফিকুর রহমান বলেন, আজ থেকে এক বছর আগে এমন একটি কর্মী সম্মেলনের স্বপ্নও দেখিনি আমরা। কারণ সেই সময় এমন একটি সরকার ক্ষমতায় ছিল, তারা গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছিল, মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিল। মানুষ কষ্ট পেলে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারতো না। ভাল লাগলে হাসতেও পারতো না। একটা ভয়ের সংস্কৃতি বিগত সরকার চালু করেছিল। কেউ তাদের মন্দ কাজের সমালোচনা করলে আস্তে করে জেলে ঢুকিয়ে দিতো।
তিনি বলেন, আজকে শুনি একজন আওয়ামী লীগের নেতা বলেছেন- এখন চালের দাম এতো কেন? তারা তো ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবেন। তারা কী সাড়ে ১৫ বছর খাওয়াতে পেরেছেন? মাঠ থেকে উত্তর আসে- না, না। আপানারা দেখেছেন আপনাদের এলাকার এমপি-মন্ত্রী-সচিব হওয়ার আগে তাদের সহায়-সম্পত্তি কেমন ছিল। ১৫ বছরে খেয়ে দেয়ে তারা কেমন মোটা তাজা হয়েছেন তাও আপনারা দেখেছেন। এই চিত্র শুধু মাগুরাতে নয়। এচিত্র ছিল সারা বাংলাদেশের। কেউ কেউ বলেছেন আমি আমার পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। আমার পাওয়ার কিছু নাই। এখন কেবল দেওয়ার পালা। হ্যাঁ তারা দিয়েছেন ছোপ ছোপ রক্ত আর সারি সারি লাশ। এমন কোন জনপদ বাংলাদেশে নেই যে তারা নির্দয়ভাবে হত্যাকাণ্ড চালায়নি। এমনকি ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত কাজটি চালিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তারা পালিয়ে গেছেন। দেশ যদি আপনার হয়ে থাকে, দেশকে ও মাটিকে ভালবেসে থাকেন, তাহলে পালালেন কেন? প্রশ্্ন রাখেন ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি ব্রুনাই সফরের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, ব্রুনাই সাড়ে ৫ লক্ষ মানুষের দেশ এবং পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি দেশ। সেখানে রাজতন্ত্র হলেও রাজা তার জনগণকে তার অন্তরে ধারণ করেন। এজন্য রাজার কোন নিরাপত্তা লাগে না। সেখানে নাগরিকদের অধিকার চাইতে হয় না। কিন্তু আমাদের দেশেতো অধিকারের জন্য প্রতিদিন মিটিং মিছিল করতে হয়। কিন্তু সেখানে না চাইতেই অধিকার পেয়ে যায় নাগরিকরা। আপনারা কি সেরকম দেশ চান? মাঠ থেকে জবাব আসে- ‘চাই’। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন একটি সুন্দর মানবিক দেশ গঠনের জন্য লড়াই করছে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ কোরআনের দ্বারা পরিচালিত হয় বলে ব্রুনাইতে রাজার বাড়িতে নিরাপত্তা কর্মী লাগে না। বছরে একটি খুনও হয় না।
তিনি বলেন, আমাদের দুজন দায়িত্বাশীল মন্ত্রী ছিলেন। কেউ বলতে পারবে না যে, তারা দুই টাকার দুর্নীতি করেছেন। তারা সবার অধিকার সবার হাতে তুলে দিয়েছেন। আমরা যদি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত হই, আগামিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সমস্ত ইসলামী দল, দেশপ্রেমিক দল ও মানবিক দলকে সাথে নিয়ে সরকার পরিচালনার সুযোগ পাই, ইনশাআল্লাহ একটি মানবিক দেশ উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো। সেই দেশটা ইনশাআল্লাহ এমন হবে, এই দেশে একজন মা তিনি ঘরের ভেতর থাকবেন নিরাপদ, রাস্তায় বের হলে তিনি হবেন সম্মানিত, কাজের ময়দানে তিনি হবে মর্যাদাপ্রাপ্ত।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, আমাদের মায়েরা রসূলে করিম (সা:) এর সাথে থেকে যুদ্ধ করেছেন, তারা মহান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা ব্যবসা করেছেন এবং সমাজ পরিচালনায় ভুমিকা রেখেছেন। ডা, শফিকুর রহমান বলেন, কোন দল নয়, ধর্ম নয় দেশ আমাদের সবার। এই নীতিকে ভিত্তি করে যার যার অধিকার তা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা দেশ গড়বো। সবার অধিকার সমান থাকবে।
তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করার আশ^াস দিয়ে বলেন, আমরা এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলবো যাতে কাউকে বেকার থাকতে না হয়। স্কুল কলেজ মাদরাসা থেকে বের হয়ে একটা চাকরির জন্য এ ঘরে ঐ ঘরে ঘুরতে না হয়। আমরা এমন একটা দেশ চাই, যেখানে সবার ন্যায্য স্বাধীনতা থাকবে। আমরা সীমাহীন অন্যায্য স্বাধীনতায় বিশ^াসী নই। যে স্বাধীনতা অপরের চরিত্র হনন করে। মিথ্যা গুজব ছড়ায়। একজনের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ায়। আমরা এরকম অধিকার দিতেও চাই না, দেখতেও চাই না।
আমীরে জামায়াত বলেন, আমরা এমন একটা দেশ চাই যেখনে সাংবাদিকরা নির্ভয়ে বলবে তুমি কালো, তুমি সাদা। আমরা সেই স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই। বিচাররের অঙ্গনে আজকে মানুষ বিচার পায় না। ঘুষের রমরমা বাণিজ্য হয়। বিচারপতিরা ঘুষ খায়। বলবেন তার কোন প্রমাণ আছে? হাজার প্রমাণ আছে। সবশেষ প্রমাণ হচ্ছে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। আমরা এমন বিচার নিশ্চিত করতে চাই যেখানে কোন বিচারক রাষ্ট্রের কোন কর্মকর্তা, কোন কর্মচারী ঘুষের জন্য হাত বাড়ানোর দু:সাহস দেখাবে না। যদি কেউ হাত বাড়ায় তাহলে তার সেই হাত ভেঙ্গে অবস করে দেওয়া হবে। ডা. শফিকুর রহমান ঘুষ আর দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনের কথা জানিয়ে বলেন, ঘুষ ও দুর্নীতি দুটি-ই সমাজের ক্যান্সার। এই ক্যান্সার দূর করতে না পারলে স্বপ্নের বাংলাদেশ কেউ গড়তে পারবে না।
বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করে জামায়াতের আমীর বলেন, ২০০৯ সালে যে খুন গুম আর ধর্ষণের রাজনীতির শুরু হয়েছিল সেই রাজনীতির কবর আমরা রচনা করবো ইনশাআল্লাহ। কারণ আমাদের সন্তানেরা রাজপথে স্লোগান দিয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আমরা বৈষম্য চাই না, ন্যায় বিচার চাই। আমরা শহীদদের আত্মাকে কথা দিচ্ছি, আল্লাহকে কথা দিচ্ছি, শহীদদের বেঁচে থাকা আপনজনদের কথা দিচ্ছি, আহত পঙ্গু ভাইবোনদের কথা দিচ্ছি, তাদের স্বপ্নের সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এজন্য যদি অপেক্ষা করতে হয় তাতে রাজি আছি। কিন্তু লড়াই ছেড়ে দিবো না। এই লড়াই আমাদের অব্যাহত থাকবেই। এই লড়াইয়ে এবার আমরা জনগণকে পাশে পাবো। ইতোমধ্যে জনগণ জানান দিয়েছে যে, আমরা চাঁদাবাজমুক্ত, দখলদার মুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, ন্যায় এবং সাম্যের একটি বাংলাদেশ চাই। তিনি বলেন এমন বাংলাদেশ গঠনের লড়াই শেষ হয়নি। সামনে আরও লড়াই করতে হবে। এজন্য মাগুরাবাসীকে পাশে পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ডা. শফিকুর রহমান, স্লোগান তোলেন “আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”। মাঠ থেকে তার সঙ্গে সুর মিলান লাখো কণ্ঠ।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের জানাচ্ছি অতীতে আমরা কখনো চাঁদাবাজি করি নাই। এখন করছি না। ভবিষৎতেও আমরা করবো না। যদি আল্লাহ আমাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দেন কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেবো না। আমরা দখলবাজি চালাই না, ভবিষৎতে কাউকে দখলবাজি চালাতে দেওয়া হবে না। আমরা মানুষকে ভিন্ন চোখে দেখি না। এসময় তিনি মাগুরার বৃদ্ধা কিরণবালা এবং কক্সবাজারের বৌদ্ধ ধর্মের নি:স্ব ব্যক্তিকে নিরবে সহায়তা করার উদাহরণ দেন। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর হিন্দুদের বাড়িঘর পাহারা দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন আমীরে জামায়াত।
জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সাঈদ আহমদ বাচ্চুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মো. মোবারক হোসেন, যশোর- কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আবদুল মতিন, ড আলমগীর বিশ^াস, মাওলানা আজিজুর রহমান ও শহীদ মিঠু বিশ^াস মারুফের বাবা মো. শাহজাহান।
মোবারক হোসেন বলেন, এখন কাজ একটাই যা আমীরে জামায়াত শুনিয়েছেন। ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করা জামায়াতের পক্ষেই সম্ভব। দেশের মানুষ ডান বাম সব দেখেছে। তারা এখন কোরআনের আইন দেখতে চায়। তিনি উল্লেখ করেন, এখন এক ধরণের বাহানা চলছে। আমাদের ব্যাপারে ব্লেম গেইম চলছে। আমরা নির্বাচন চাই, কিন্তু যেনতেন নির্বাচন চাই না। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাওলানা আজীজুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী চায় দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যয্যতা প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি উল্লেখ করে, ২০২৪ সালে সারাদেশে সাড়ে ১৬শ’ ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন। এর মধ্যে মাগুরায় রাব্বি, মাহদিসহ দশজন জীবন দিয়েছে। তাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা সুন্দর শান্তির বাতাস পেয়েছি। কেউ যেন ষড়যন্ত্র না করতে পারে সেদিন সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
শহীদ মিঠু বিশ^াস মারুফের বাবা মো. শাহজাহান বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের কী দোষ ছিল! তিনি বলেন, রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা যেন কোনভাবেই ব্যাহত না হয়। তিনি শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়াকে তিরষ্কার করে বলেন, সাহস থাকলে সামনে আসো। চট করে ঢুকতে চাও কেন?
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা বদরুদ্দীন, ঝিনাইদাহ জেলা আমীর অধ্যাপক আলী আজম, কৃষিবিদ গ্রুপের এমডি ড. আলী আফজাল, সাবেক ছাত্র নেতা এডভোকেট আজমত হোসেন, আলমগীর হোসনে রাজু, জেলা গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি বরকত উল্লাহ, সাবেক ছাত্র নেতা মো: আনিসুর রহমান, শ্রমিক নেতা অধ্যাপক মাওলানা মো. মশিউর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সভাপতি মো, ইব্রাহীম বিশ^াস, জেলা জামায়াতে তথ্য ও গবেষণা সেক্রেটারি মাওলানা কবির হুসাইন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব ও ক্রিড়া বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক মো, রবিউল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি মো. আমিন উদ্দিন আশিক, পৌর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আশরাফুল আলম, মহম্মদপুর উপজেলা আমীর নূর আহম্মদ, শালিখা উপজেলা আমীর অধ্যাপক আফসার উদ্দিন, সদর উপজেলা আমীর অধ্যাপক ফারুক হোসাইন শ্রীপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা ফখরুদ্দীন মিজান ও শালিখা উপজেলার সাবেক আমীর আলমগীর হোসেন।
মাগুরা জেলার অমুসলীম নেতা উত্তম কুমার বিশ^াস বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে মদিনার সনদ অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে। তাতে হিন্দুরাই উপকৃত হবে। আমরা আর ঘসেটি বেগম কিংবা ও লেন্দুপ দর্জির দেশ চাই না। দেশ আমাদের। আমরাই দেশ গড়বো। তিনি উল্লেখ করেন, ন্যায় এবং সাম্যের দেশ কেবল জামায়াতে ইসলামী-ই প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
মাগুরা জেলা অমুসলীম শাখার প্রচার সেক্রেটারি প্রনয় কুমার বিশ^াস বলেন, হিন্দুরা দেশের ১৮ কোটি মানুষের বাইরে না। তাদের যেমন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি করার অধিকার আছে, তেমনি জামায়াতে ইসলামী করার অধিকারও রয়েছে। তিনি দেশের সমস্ত অমুসলীমদের সৎ মানুষের সঙ্গে রাজনীতি করার আহবান জানিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামী আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে না। তারা আমাদের ইজ্জতে আঘাত করেনা। ৫৩ বছর আমাদের নির্যাতন করা হয়েছে। হিন্দুদের জান-মাল-ইজ্জত রক্ষায় জামায়াতের রাজনীতি করার আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মাগুরা জেলা আমীর এম বি বাকের বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারো বাপ-দাদার কিংবা কোন ব্যক্তির আইন দিয়ে দেশ পরিচালনা করবে না। আমরা আল্লাহর আইন দ্বারা দেশ চালাতে চাই। আমরা মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
এদিন দুপুরে শহরের দরি মাগুরাস্থ আল আমীন কমপ্লেক্সে মহিলা রুকন সম্মেলন ও অমুসলীম নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আমীরে জামায়াত। বিকেলে জেলার এলজিইডি সম্মেলন কক্ষে পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ডাক্তার শফিকুর রহমান।