চকরিয়ার ছেলে স্কলারশিপ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গেটিসবার্গ কলেজে

ফজলুল কাদের



প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে ভর্তি হলো চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শেষ করে এবার সে ঘাড় ঘুরিয়ে বললো আমি এখানে পড়বো না; অর্থাৎ চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় গ্রামের স্কুলে পড়বে না। পড়বে চট্টগ্রাম শহরের নাম করা কোনো স্কুলে। ব্যাস ভর্তি হয়ে গেলো চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে।
সেখান থেকে এসএসসি পাস করে আবার ঘাড় বাকা করে বললো আমি চট্টগ্রাম পড়বো না; পড়বো ঢাকার কোন এক নাম করা কলেজে যেই কথা সেই কাজ ভর্তি হলো ঢাকা সরকারি কলেজে, এইচএসসি দিল; আর বলতে লাগলো আমি মেডিকেল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো না।
তার এমন পাগলামিতে তার মা বাবা আত্মীয় স্বজন কেউ বাঁধা দেননি। কারণ সে ছোটকাল থেকে এমন কোন কাজ করেনি যেটিতে তার মা বাবা আত্মীয় স্বজনের মনঃক্ষুন্ন হয়। তার সফলতার ভার বয়সের চেয়েও বেশি। পঞ্চম, অষ্টম, এসএসসি, এইচএসসি সব পরীক্ষায় তার সফলতা আছে।
আমরা ভাই বোন সাত জনের মধ্যে নাহিয়ানে মা পঞ্চম। সে আমরা সবার চেয়ে আলাদা মেধাবী ও সদা হাস্যোজ্জল। সরকারি মুসলিম হাইস্কুলের এসএসসি ২০২২ এবং ঢাকা কলেজ ২০২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান ফয়েজ নাহিয়ান। পিতা আবু মোহাম্মদ হাসান মাতা ছাবেকুন নাহার গ্রাম করাইয়া ঘোনা ৫নং ওয়ার্ড চকরিয়া পৌরসভা কক্সবাজার।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান “গেটিসবার্গ কলেজে” শতভাগ স্কলারশিপ পেয়ে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছে। প্রায় ৪ কোটি টাকা সমপরিমাণ সম্পূর্ণ স্কলারশিপ পাওয়া খুব কম শিক্ষার্থীদের মধ্যে সে একজন।
নাহিয়ান মুসলিম হাই স্কুলের বিতর্ক সংগঠন জি.এম.এইচ.এস.ডি.এস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলো। এছাড়া স্কুলের হয়ে জাতীয় বিজ্ঞান উৎসব এবং বিতর্কে থানা ও জেলা পর্যায়ে তার কৃতিত্ব ছিলো।
নাহিয়ান তার ফ্যাশনের প্রতি অনেক ডেডিকেটেড একটা ছেলে। পড়াশুনা থেকে শুরু করে কো-কারিকুলার,সবকিছুতেই সে পরিশ্রমী ছিলো। তবে নাহিয়ানের স্কুল জীবন খুব একটা সহজ ছিলো না, বাড়ি চকরিয়া হওয়াতে স্কুলের হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করতে হয়েছে তাকে। বাবা-মা থেকে দূরে হোস্টেলের কঠিন পরিবেশে নিজের মতো করে সবকিছু গুছানো, কোচিং করা, বিতর্কসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে পরিক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সবকিছুই সুন্দরভাবে করেছে। যখনই কোন সুযোগ পেয়েছে সেটাকে কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে সে। নাহিয়ানের উপর আমার ভরসা ছিলো, জানতাম সে একদিন নিজের স্বপ্নগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে। আশা করি একদিন বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে ইনশা’আল্লাহ।

লেখক: নাহিয়ানের মামা

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: