চকরিয়া টাইমস :
বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি টি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি মডেল সমিতি, যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে বৃটিশ শাসনামলে । সমগ্র বদরখালী ইউনিয়ন তথা বদরখালী মৌজার প্রায় ৭ সাত হাজার একর ভূমির বন্টন, শাসন ও সংরক্ষণের বিশেষ নীতিমালায় একই সাথে গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সহাবস্থানের এক বিরল দৃষ্টান্ত এই শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। সমিতির বর্তমান বয়স প্রায় শতাব্দী ছুঁই ছুঁই। ইতিহাসের দীর্ঘ পরিক্রমায় বর্তমানে বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই সমিতি। এই সংকট উত্তরণের জন্য সৎ , যোগ্য , দক্ষ ও চৌকস ব্যক্তিদের নির্বাচিত না করলে সমিতির সংকট উত্তরণ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে । এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।সমিতির বিগত ২/৩ যুগের নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, অযোগ্য ব্যক্তিরাই বারবার নির্বাচিত হয়েছে বেশী। এর কারণ সমিতির সদস্যদের আত্মোপলব্ধি বা সভ্যতার সংকট বলে ধারণা করা যাচ্ছে। যেহেতু নির্বাচনের সময় পূঁজিপতিরা বিশাল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভোট ক্রয়ের মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিদের কৌশলে পরাজিত করে ক্ষমতার মসনদ দখলে নেয়। দেখা যায় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রেকর্ডপত্র সৃজন করে সমিতির কোটি কোটি টাকার সম্পদ স্বনামে বেনামে দখল করে বসে । পক্ষান্তরে সুবিধাভোগী এইসব নেতারা সমিতির স্বত্ব স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলা মোকদ্দমাসহ বৃহৎ সমস্যাদি নিয়ে গঠনমূলক কোন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অবচেতন হয়ে ঘুমের ভান ধরে এড়িয়ে যান।
কথায় আছে গৃহস্থের অবস্থা বুঝেই চোরেে ভার বাঁধে। সমিতির সভ্যরা যদি তাদের মূল্যবান ভোট টাকার বিনিময়ে বিক্রি না করে সমিতি বিষয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও চৌকস ব্যক্তিদের নির্বাচিত করলে সমিতির সৃষ্ট নানামুখী সংকট উত্তরণের পথ সুগম হবে বলে আশা করছেন সচেতন সভ্যরা।
সমিতির প্রতিষ্ঠাকাল হতে নব্বই দশক পর্যন্ত সমিতির নির্বাচনে ভোট বিক্রির সংস্কৃতি ছিলনা । ১৯৯৯ সাল হতে এই ভোট বেচা-কেনার অপ সংস্কৃতি ব্যাপক আকার ধারণ করে সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। যার কারণে যোগ্য ব্যক্তিরা পুঁজিপতিদের কালো টাকার কাছে হেরে যাচ্ছেন বার বার। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যোগে ভোট বেচা-কেনার এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে সমবায় জগতের বাতিঘর দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে অকার্যকর হয়ে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ব্যর্থ ইতিহাসে স্থান পাবে। এই সংকটে হতে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সচেতন সভ্য ও অংশীদারদের যুগপৎ আন্দোলন।
এখনই সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। আসন্ন ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের থেকে নিম্নের ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা সদস্যদের থেকে যোগ্য, দক্ষ ও চৌকস সমবায় প্রেমিকদের মধ্যে যে সব ক্যাটাগরি থাকা উচিত।
যথাক্রমে -
(১) মূল সভ্য, যারা প্রকৃত সমবায় প্রেমিক।
(২) বর্ধিত সভ্য/সদস্য যাঁরা মূল সভ্যদের ঔরষজাত সভ্য; তাঁরাও প্রকৃত সমবায়ী।
(৩) শেয়ারের অংশীদার হতে অংশীদারদের মধ্যে ক্রয় -বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত সভ্য; তাঁরাও সমবায় প্রেমিক।
(৪) এক শেয়ারের অংশীদার হতে অন্য শেয়ারের অংশীদারদেরদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়ে মাধ্যমে অর্জিত সভ্য; তাঁদের নিকট সদস্য পদ অনেকটা বাণিজ্যিক।
(৫) সমিতির অনুমোদিত আশ্রিতদের মধ্য থেকে নেওয়া করণা বা ভাসমান সদস্য; তাঁদের নিকট সমবায় প্রেম ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ।
(৬) সমিতির অনুমোদনহীন আশ্রিত ব্যক্তি বা সমিতি এলাকার বাহিরের ব্যক্তি, যারা পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে বর্ণিত ক্যাটাগরীর সভ্য হতে ক্রয়ের মাধ্যমে বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী সভ্য; তাঁদের নিকট সমবায় প্রেম তো দূরের কথা অধিকন্তু স্বত্ব-স্বার্থের প্রেমই বেশি।
বর্তমান প্রার্থীদের মধ্যে কারা কোন কোন ক্যাটাগরির সভ্য বা সদস্য..???
0 comments: